✏অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:৫২, ১৭ জুন ২০২৫
ইরানের ইস্পাহান শহরের নয় বছর বয়সী এক শিশু লাল মার্কার কলমে একটি ছোট্ট চিরকুটে লিখেছে, "আমরা পালিয়ে যাচ্ছি"। যুদ্ধের বিভীষিকা আর অনিশ্চয়তার মাঝে এই সরল বাক্যটি যেন পুরো জাতির আতঙ্কের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
শিশুটির বাবা ফরহাদ (ছদ্মনাম) পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখতে দিনরাত সংগ্রাম করে চলেছেন। তিনি চান, তার ছোট সন্তানরা যেন যুদ্ধের ভয়াবহতা অনুভব না করে। তাই প্রতিদিন তাদের কার্টুন দেখান, খেলায় ব্যস্ত রাখেন। কিন্তু ঘরের বাইরের বাস্তবতা ভিন্ন—চারপাশে শুধু আতঙ্ক আর বিস্ফোরণের শব্দ।
ইস্পাহান শহরে অবস্থিত একটি পারমাণবিক কেন্দ্র ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু হওয়ায় এলাকাটিতে ভয়াবহ হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের চালানো হামলায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। ফরহাদ বলছেন, "আমি আর পারছি না। এই দেশ থেকে পরিবারসহ পালাতে চাই।"
তার পরিকল্পনা—সবার আগে তুরস্কে যাওয়া, এরপর অন্য কোনো নিরাপদ দেশে আশ্রয় নেওয়া।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার এই সাম্প্রতিক সংঘাতে ইতোমধ্যে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি হামলা পাল্টা-হামলা শুরু হয়েছে। হাইফার তেল শোধনাগারে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত তিনজন। পাল্টা হামলায় ইরানের বিভিন্ন শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চালানো হামলায় ২২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে ৭০ জন নারী ও শিশু। অন্যদিকে, ইরানের অভ্যন্তরেও প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০ জন।
এটি ইসরায়েল-ইরানের দ্বিতীয় সরাসরি যুদ্ধ। এই রক্তাক্ত অধ্যায়ের মাঝে একটি শিশুর চিরকুট যেন যুদ্ধের নিষ্ঠুর সত্যকে নিঃশব্দে বলে দেয়—“আমরা পালিয়ে যাচ্ছি।”
0 মন্তব্যসমূহ