✏অনলাইন ডেস্ক
রাজবাড়ী সার্কেল | প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১:৩৮
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় স্বামী তালাক দেওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টা পরই পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করেছেন এক নারী। বুধবার (২৫ জুন) উপজেলার দক্ষিণ হিরণ গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে দক্ষিণ হিরণ গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার ছেলে খায়রুল মোল্লার সঙ্গে পাশের চিতশী গ্রামের ২৫ বছর বয়সী এক নারীর বিয়ে হয়। দেড় বছর পর তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তবে স্বামী খায়রুল জীবিকার প্রয়োজনে প্রায়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন। এই সুযোগে ওই নারী একই গ্রামের হাসিব শেখের (২৫) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে হাসিব শেখ গোপনে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করলে বাড়ির লোকজন তাদের আটক করে এবং ঘরের মধ্যে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। পরদিন বিকেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে খায়রুল মোল্লাকে স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। তালাকপ্রাপ্তির মাত্র দুই ঘণ্টা পরই ঘাঘর বাজারে চার লাখ টাকা দেনমোহরে হাসিব শেখের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পর হাসিব শেখ ও নববধূ জানান, তারা উভয়ে খুশি এবং সবার কাছে সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
তবে এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান চমন-ই-এলাহী বলেন, “এভাবে তালাকের দুই ঘণ্টা পর বিয়ে দেওয়া শরিয়ত ও আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধরনের সালিশ বৈঠক যারা করেন, তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।”
এদিকে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক রতন সেন কংকন বলেন, “এলাকায় অপরাধমূলক অনেক ঘটনা সালিশের মাধ্যমে ফয়সালা করা হচ্ছে, ফলে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে একে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখলেও, অনেকেই আইন ও নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন তুলছেন।
0 মন্তব্যসমূহ