✏অনলাইন ডেস্ক
রাজবাড়ী সার্কেল | প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১:০২
রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অব্যবস্থাপনা ও কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারণে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটির মানবিক বিভাগের দুই শিক্ষার্থী—ইয়াসির আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশায় ভেঙে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের পরিবার।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এডমিট কার্ড সময়মতো প্রদান করেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার আগের রাতে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদার শিক্ষার্থীদের রাত ১২টা পর্যন্ত কলেজে বসিয়ে রাখেন। তখন তিনি জানান, পরদিন সকালে এসে এডমিট কার্ড নিতে হবে। কিন্তু সকালে তারা গেলে কোনো কার্ড পাননি, উপরন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের কেউ তাদের সাথে যোগাযোগ করতেও রাজি হয়নি।
ইয়াসির আরাফাত অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ ম্যাডাম তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, এডমিট কার্ড না পাওয়ার কথা যদি তারা প্রকাশ করেন, তাহলে তাদের পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে না। একই অভিযোগ করেন সাজ্জাদ হোসেনও।
সাজ্জাদের বাবা আবদুল গফুর বলেন, “আমার ছেলের রোল ছিল ১০৯১, কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ রোল দিয়েছে ২০৯২। আমরা মনে করি, টাকা খেয়ে আমার ছেলের রোল অন্য কাউকে দিয়ে দিয়েছে। এখন আমার ছেলের জীবন অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে।”
সাজ্জাদের মা বিলকিস বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সকাল থেকে কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে আছি। কেউ সামনে আসছে না, ফোন ধরছে না। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে এরা খেলা করেছে।”
অভিযোগের বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে কলেজের গভর্নিং বডির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও ডিএনসিসি অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনে ইতোমধ্যেই দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “যাদের গাফিলতিতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারেনি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি অধ্যক্ষের দায়ও যদি প্রমাণিত হয়, তাকেও ছাড় দেয়া হবে না।”
ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
0 মন্তব্যসমূহ