Header Ads Widget

১৬ বিলিয়ন পাসওয়ার্ড ফাঁস: হুমকির মুখে সাইবার নিরাপত্তা

 ✏অনলাইন ডেস্ক

রাজবাড়ী সার্কেল | প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১২:২৭





ডার্ক ওয়েবে ১৬ বিলিয়ন পাসওয়ার্ড ফাঁসের নজিরবিহীন ঘটনার কারণে সাইবার নিরাপত্তা বর্তমানে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এই ফাঁসের ফলে ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট তথ্যের সুরক্ষায় অভূতপূর্ব সংকট দেখা দিয়েছে।


ডার্ক ওয়েব ও তথ্য ফাঁসের বিবরণ


সাইবারনিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাঁস হওয়া ১৬ বিলিয়ন তথ্যের মধ্যে রয়েছে লগইন ডিটেইলস এবং পাসওয়ার্ড। এর ফলে অ্যাপল, গুগল, ফেসবুক, গিটহাব, টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম এবং সরকারি পরিষেবার নিয়ন্ত্রণ সাইবার জালিয়াতদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।


রহস্যময় ডাটাবেস ও লিকের সূত্র


ফোর্বসের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সাইবারনিউজের গবেষক ভিলিয়াস পেতকাউস্কাসের নেতৃত্বে চালানো তদন্তে ১৮৪ মিলিয়ন রেকর্ড সম্বলিত একটি অসুরক্ষিত ডাটাবেস আবিষ্কৃত হয়েছে। এই ডাটাবেসটি ডার্ক ওয়েবে প্রকাশিত হওয়ার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, কর্পোরেট প্ল্যাটফর্ম এবং সরকারি পরিষেবার তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। গবেষকরা মোট ৩০টি ডাটাসেটের সন্ধান পেয়েছেন, যেগুলোর প্রতিটিতে ৩.৫ বিলিয়ন পর্যন্ত রেকর্ড রয়েছে।


তথ্য ফাঁসের কারণ ও কৌশল


গবেষকরা মনে করেন, এই বিশাল তথ্য ফাঁসের পিছনে ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার মূল ভূমিকা পালন করেছে। এই ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই ব্রাউজারে সংরক্ষিত ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে একটি সার্ভারে প্রেরণ করে। ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো অত্যন্ত সংগঠিত, যেখানে প্রতিটি এন্ট্রিতে একটি নির্দিষ্ট ইউআরএল, ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড রয়েছে।


গবেষকদের পর্যবেক্ষণ


ভিলিয়াস পেতকাউস্কাস জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই এই তথ্য ফাঁসের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ৩০টি ডাটাসেট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতিটি ডাটাসেটে কয়েক কোটি থেকে সাড়ে তিন বিলিয়ন পর্যন্ত ইউজার ডেটা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বিপুল তথ্য ভাণ্ডার ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষকরা উদ্বিগ্ন।


সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা


বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তথ্য ফাঁসের প্রভাব কেবল ব্যক্তি পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ফলে কর্পোরেট এবং সরকারি পর্যায়েও বড় ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে ব্যাংকিং সেবা পর্যন্ত বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


পরামর্শ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা


এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবহারকারীদের শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার, দুই স্তরের প্রমাণীকরণ (2FA) চালু করা এবং ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, কর্পোরেট এবং সরকারি সংস্থাগুলিকে তাদের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।




১৬ বিলিয়ন তথ্য ফাঁসের এই ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী সাইবার নিরাপত্তার উপর একটি বড় ধরনের সতর্কবার্তা। এটি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি।




প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে। আপনি যদি এটি পরিমার্জন বা সম্পাদনা করতে চান, দয়া করে জানান।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ