চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং শুয়েশিয়াং ঘোষণা দিয়েছেন যে, ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনের বাজারে বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাবে। বৃহস্পতিবার চীন সফররত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ ঘোষণা দেন। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর এই সুবিধা আরও দুই বছর বহাল থাকবে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ হবে। উত্তরণের পরেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র তিন বছর শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা বজায় রাখবে। যদিও কানাডা একই সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও কোনো আইনি পরিবর্তন করেনি। অন্যদিকে, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের কাছে একই সুবিধা চাইলেও তারা এখনো সাড়া দেয়নি।
চীন ২০২২ সালে ৯৯% পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করলেও বাংলাদেশ এ সুযোগের সম্পূর্ণ সুবিধা নিতে পারেনি, বরং রপ্তানি কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি হয়েছে ৬৭৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় কম।
র্যাপিড এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম এ রাজ্জাক মনে করেন, বাংলাদেশ যথাযথ প্রস্তুতি না থাকায় এই সুবিধার পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেনি। তিনি বলেন, চীনের মতো বড় অর্থনীতির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করলে দীর্ঘ মেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধা অর্জন করা সম্ভব হবে।
এছাড়া, চীনে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। চীনা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চাইনিজ ইকোনমিক জোন স্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের লক্ষ্যে চীন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে সংলাপ করবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ভারসাম্য কমাতে শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। চীন বাংলাদেশের কাঁঠাল, পেয়ারা ও জলজ পণ্য আমদানি করতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রফেসর ইউনূস এই বৈঠকে চীনের নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, 'এই বৈঠক বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।'
0 মন্তব্যসমূহ