✏ মনজু শেখ
প্রকাশিত: ৪:২০, ৩১মে ২০২৫
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে এক অনন্য উৎসবমুখর পরিবেশে। রাজবাড়ী সরকারি কলেজসহ দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে এই পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৮৭৯টি কেন্দ্রে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। রাজবাড়ী সরকারি কলেজে পরীক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানান, “সারাদেশে একযোগে পরীক্ষা গ্রহণ একটি বড় দায়িত্ব। কেন্দ্রসচিব থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে কোনো সমস্যা না হয়। পরীক্ষাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সর্বশেষ সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে। এরপর ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। দীর্ঘ আট বছর পর আবারও সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বছরের ভর্তি পরীক্ষা ছিল এমসিকিউ (MCQ) ভিত্তিক। পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে এক ঘণ্টায় শিক্ষার্থীদের উত্তর দিতে হয়েছে। সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর প্রদান করা হলেও ভুল উত্তরের জন্য কোনো নম্বর কর্তন হয়নি। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে কমপক্ষে ৩৫ নম্বর অর্জন বাধ্যতামূলক ছিল।
পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল যথাক্রমে ৪০% ও ৬০% হারে যুক্ত করে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হবে।
ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ২৪৭টি কেন্দ্র বরাদ্দ দেওয়া হয়। অন্যান্য বিভাগে যথাক্রমে খুলনায় ১৫৬টি, রাজশাহীতে ১৪৩টি, চট্টগ্রামে ১৩৪টি, রংপুরে ৯৬টি, বরিশালে ৫৯টি এবং সিলেটে ৪৪টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। সরকারি কলেজ ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে ৮৮১টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ২৬৪টি সরকারি এবং ৬১৭টি বেসরকারি কলেজ। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সম্মান প্রথম বর্ষের আসন সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি।
এছাড়া ডিগ্রি (পাস) কোর্সে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আসন সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি, যা পরিচালিত হয় দেশের ১ হাজার ৯৬৯টি কলেজে।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ ৮টি আসন কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে—
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য: ৩টি
সরকারি কর্মচারীর সন্তানদের জন্য: ৩টি
আদিবাসীদের জন্য: ১টি
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য: ১টি
সুষ্ঠু ও সফলভাবে অনুষ্ঠিত এই ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং কলেজ প্রশাসনের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। রাজবাড়ী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল আত্মবিশ্বাস ও আগামীর উচ্চশিক্ষা যাত্রার এক নতুন আশার আলো।
0 মন্তব্যসমূহ