Header Ads Widget

বাবার হত্যার বিচার চেয়ে রাজপথে ছয় মাসের শিশু বায়োজিদ

 


ছোট্ট শিশু বায়োজিদ যেন কিছুই বোঝে না—পাশে এত মানুষ কেন, মায়ের চোখে কেন অশ্রু, তার জীবন থেকে কেন হঠাৎ করেই হারিয়ে গেল প্রিয় বাবা। মাত্র ছয় মাস বয়সেই বাবাকে হারিয়ে সে আজ পথে নেমেছে বিচারের দাবিতে।


রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের জোনা বাজারে বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠিত হয় এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ। কৃষক ও বিএনপির কর্মী রাশিদুল ইসলাম হত্যার প্রতিবাদে এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ। মায়ের কোলে করে সেখানে হাজির হয় ছয় মাসের শিশু বায়োজিদ, যে বুঝতে না পারলেও তার উপস্থিতি প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে।


মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল আলম মুরাদ বিশ্বাস, নিহত রাশিদুলের বাবা কিয়ামউদ্দিন মণ্ডল, মা আলেয়া বেগম, স্ত্রী জরিনা বেগম, জিয়া সাইবার ফোর্সের কেন্দ্রীয় সদস্য ফরহাদ হোসেন, জেলা শাখার তথ্য ও পরিকল্পনা সম্পাদক ইকবাল হাসান, কালুখালী উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আনিছ মোল্লা, ইউপি যুবদলের আহ্বায়ক ওয়াজেদ আলী ও মৌরাট যুবদলের আহ্বায়ক ফরিদ বিশ্বাস প্রমুখ।


বক্তারা বলেন, রাশিদুল একজন নির্যাতিত বিএনপি পরিবারের সদস্য। তাকে নির্মম নির্যাতনের পর পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।


মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা পাংশা-লাঙ্গলবাঁধ সড়কে প্রদক্ষিণ করে।


উল্লেখ্য, বরিশাল থেকে ধান কেটে ২০-২৫ দিন পর গত ২ মে রাতে বাড়ি ফেরেন রাশিদুল ইসলাম। পরদিন সকালে ধান ভাগাভাগির কাজে বের হলে পূর্ব শত্রুতার জেরে নিভা গ্রামের সড়কে উপজেলা বিএনপি নেতা শাহ মো. রফিকুল ইসলাম, আকিদুল ইসলাম ও মারুফ হাসান সুমনসহ ১০-১৫ জন মিলে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।


এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত নেতা মারুফ হাসান সুমনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।


এই হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হয়ে, ছয় মাসের বায়োজিদ আজ আমাদের চোখে প্রশ্ন তোলে—বিচার কি মিলবে?



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ