গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ১০০ ফিলিস্তিনি

 ✏অনলাইন ডেস্ক

রাজবাড়ী সার্কেল | প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ৮:৫৮

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলায় মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সর্বশেষ, ২৬ জুন (বৃহস্পতিবার) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, মাত্র একদিনেই ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শত শত মানুষ। নিহতদের মধ্যে শিশু, নারী এবং ত্রাণের আশায় অপেক্ষমাণ ক্ষুধার্ত সাধারণ মানুষ রয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২৫ জুন) গাজা জুড়ে দিনভর চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু নিরীহ মানুষ। গাজার পূর্বাঞ্চলের শাজাইয়া এলাকায় দুটি পৃথক বিমান হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে দুইজন শিশু। এছাড়া মধ্য গাজার নেৎজারিম করিডোরে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে চালানো গুলিতে প্রাণ হারান আরও আটজন।

দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমাংশে তিনজন সহায়তা প্রত্যাশীকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। একইভাবে পশ্চিম গাজার একটি বাড়িতে বিমান হামলায় নিহত হন নয়জন, যাদের মধ্যে চারজন শিশু।

গাজার উত্তর-পশ্চিমাংশে একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের ওপর চালানো গোলাবর্ষণে নিহত হন এক মা ও তার দুই সন্তানসহ পাঁচজন। জাবালিয়া আল-নাজলায় দুটি বাড়ি ধ্বংসের পর তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়, এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকেই আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহর ও নুসাইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে দুটি বাড়িতে চালানো হামলায় নিহত হন আরও ১০ জন। আহত হয়েছেন অনেকে। খান ইউনুসের পূর্ব অংশের আবাসান শহরেও একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যেখানে সহায়তা নিতে আসা আরও পাঁচজন নিহত হন।

উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-বালাদ এলাকায় ওমারি মসজিদের কাছে মানুষ জড়ো হওয়ার সময় বিমান হামলায় নিহত হন দুইজন। গাজা শহরে একাধিক বাড়িতে চালানো পৃথক বিমান হামলায় নিহত হন আরও অন্তত ১৮ জন। এর মধ্যে শাজাইয়ায় ১২ জন এবং আল-শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে পাঁচ শিশুসহ নয়জন রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চালানো ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রেখেছে।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলমান রয়েছে।

---