শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘শ্রাবণ বিদ্রোহ’ তথ্যচিত্রের প্রিমিয়ার শো। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের বিচারব্যবস্থা, ফ্যাসিবাদ, এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে সরব হন রাষ্ট্রের শীর্ষ উপদেষ্টারা। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ঘোষণা দেন, নির্বাচনের আগেই ফ্যাসিস্টদের বিচার হবে।
তিনি বলেন, “আজকে বিচার নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে, কিন্তু বিচারব্যবস্থা পূর্ণ গতিতে চলছে। আমরা জনগণকে হতাশ হতে দেব না।” শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকারকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, “হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে যারা বসে আছে, তারা বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। আমরা বিশ্বমানের বিচার করতে চাই।”
আসিফ নজরুল উল্লেখ করেন, “জুলাই মানেই আমাদের আন্দোলনের স্মৃতি। আমাদের ছোট ভাইয়ের রক্ত, বোনের কান্না, মা’দের সেবা—এই সব মিলে তৈরি হয়েছে এক মহাকাব্যিক ইতিহাস।”
অনুষ্ঠানে তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেন, “গত ১৬ বছরে জনগণ নিপীড়ন, হত্যা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছে। ফ্যাসিবাদ উৎখাত করা হয়েছে, কিন্তু সংগ্রাম শেষ হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে নিয়মিত অনুষ্ঠান করতে হবে।”
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসতে চাইবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করে নতুন প্রজন্মকে সুরক্ষা দিতে হবে।”
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “জুলাই আন্দোলন কোনো ৩৬ দিনের বিষয় নয়, এটি ৫৪ বছরের সংগ্রাম। এখন সময় এসেছে সংস্কৃতির মাধ্যমে জবাব দেওয়ার।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামান, শহীদ আবু সাঈদের বাবা মো. মকবুল হোসেন এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন পিআইবি মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন পরিচালক আরিফুর রহমান এবং প্রযোজনায় ছিল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
এ আয়োজন থেকে পরিষ্কারভাবে বার্তা দেওয়া হয়—ফ্যাসিবাদের বিচার অবশ্যম্ভাবী, আর শহীদদের ত্যাগ ভুলে যাওয়া যাবে না।
সূত্র: বাসস
0 মন্তব্যসমূহ