গাইবান্ধা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ওই এসিল্যান্ডকে ‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’ সম্বোধন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি সাংবাদিকের ফোন কেটে দেন বলে অভিযোগ করেছেন সময় সংবাদের গাইবান্ধা প্রতিনিধি বিপ্লব ইসলাম।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে নিজ জমির খারিজ সংশোধন সংক্রান্ত একটি তথ্য জানতে এসিল্যান্ডকে ফোন করেন বিপ্লব ইসলাম। ফোনালাপে তিনি জাহাঙ্গীর আলমকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেন। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে এসিল্যান্ড বলেন, ‘এসিল্যান্ডকে ভাই বলার কোনো নিয়ম নেই।’ এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন।
পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করলেও এসিল্যান্ড কল রিসিভ করেননি। আবার ফোন করলে তিনি বলেন, ‘কীভাবে সম্বোধন করতে হয়, তা শিখে তারপর ফোন দেন।’
ঘটনার অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা।
স্থানীয়রা জানান, এসিল্যান্ড জাহাঙ্গীর আলম আগেও এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। খোলাহাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা আলমউদ্দিন প্রধান বলেন, ‘এসিল্যান্ডের অনুমতি ছাড়া কেউ তার রুমে ঢুকতে পারে না। সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন না তিনি। তার মন মতো না হলে দিনের পর দিন কাজ আটকে রাখা হয়।’
বাদশা মিয়া নামের একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি খারিজ শুনানিতে গিয়েছিলাম। সেখানে স্যার না বলায় তিনি আমাকে রুম থেকে বের করে দেন। পরে ভুল স্বীকার করলে নতুন তারিখে কাজ করেন।’
গাইবান্ধা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আইনে কোথাও “স্যার” বলার বাধ্যবাধকতা নেই। একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ একেবারেই অনভিপ্রেত। এটি সরকারি চাকরির আচরণবিধিরও লঙ্ঘন।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জনপ্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থার জায়গা আরও মজবুত করতে হলে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণেও পরিবর্তন আনা জরুরি— এমনটাই মত প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিকরা।
0 মন্তব্যসমূহ